ফতেপুরের লোকাচার:
ফতেপুরের মানুষের আদিসংস্কৃতি ও লোকাচার চট্টগ্রামের অন্যান্য অঞ্চল থেকে কিছুটা ব্যবধান আছে।পারিবারিক সাংসারিক কাজে মৃৎশিল্পের ব্যবহার ছিল না তা নয়।সামাজিক অনুষ্ঠানে ও মৃৎ শিল্পের ব্যাপক ব্যবহার ১৯৭০ ইং পর্যন্ত ফরহাদাবাদের ও চট্টগ্রামের অন্যান্য স্থানেও ছিল। বিয়ে,ওরশ ইত্যাদিতে মাটির তৈরি বাসন-কোসন ব্যবহার হতো।কিন্তু বর্তমানে গৃহস্থলী কাজে মৃৎশিল্পের ব্যবহার কমে যাচ্ছে।গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক বিপর্যয় ও বিজ্ঞানের যাত্রা পথের কারণে আমরা হারাচ্ছি প্রাচীন ঐতিহ্য। আজকাল মুসলমান বিয়েতে ছোট ছোট হাঁড়ি ব্যবহার হয় না।আগে হাঁড়ি ভর্তি বাতাসা বর পক্ষ কন্যা পক্ষের দাবীমত গণনা করে দিতে হতো।হাঁড়ি ভর্তি বাতাসা কে মাইনের টুপি বলা হতো।প্রাচীনকালে মুসলমানদের বিবাহ কন্যাপক্ষের কয়েকটি দাবীর মধ্যে মাইনের টুপি একটি প্রধানদাবী।
ফতেপুরের প্রাচীন সামাজিক সংস্কৃতি:
প্রাচীনকালে ফতেপুরের পারিবারিক ও সামাজিক বহুধরনের সংস্কৃতির প্রচলন ছিল।একটি শিশু জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নানাস্তরে নানান জাতীয় সংস্কৃতির প্রভাবে পারিবারিক ও সামাজিক জীবন আনন্দঘন পরিবেশে কাটাত।ধর্মীয় বিধি-বিধান অনুসরণে মোল্লা-মিয়াজী বা মির্জিগণ নিজ নিজ এলাকার নবজাতকের নাম রাখা, দোয়া দরুদ পাঠে জীন-পরীর আসর থেকে বাঁচার জন্য তাবিজ কালাম লিখে দেন।নানী-দাদীরা নাতিকে দোলনায় চড়ান।মুড়ি, খই, চাউল, শিমভাজা খাওয়ানো নানান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পারিবারিক সংস্কৃতি বজায় রাখেন।দোলনায় চড়ানো অনুষ্ঠানে নানার বাড়ীর থেকে দোলনা, বালিশ ইত্যাদি প্রদান করা হয়।এতে নানী-দাদীরা নাচ-গানও অলাসুর ধরে গাইতেন।
(ক) অ-বাচা, ন-কাঁদিওনা ভাঙ্গিও গলা
কাইল ফজরে আনি দিয়ম চক বাজাইজ্যালোলা।
(খ) দম কল দম কল বানিয়া
বৌ আইন্নুম যে কালিয়া
বউর নাম সুরতি কন কন যাইবা বইরাতি।
(গ) অ-বাঁচান-কাঁদিও মাইনষে হুনিব
তোর মামু আইলে বাঁচা বচ্চু কিনি দিব।
আজকাল সেই প্রাচীন ধর্মীয়, আচার-আচারণ কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে।রাজা-বাদশার কাহিনী, ভাইংগা কিচ্ছা, ছড়া পাঠ লোকগীতি ও লোকসাহিত্যের কথা একজনে বলত অপরজনেরা মনোযোগ দিয়ে শুনত।কিন্তু আধুনিকযুগে এইসব হারিয়ে লোক সাহিত্যের বিলুপ্ত হতে থাকে।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS